◼️ সাহরী : .
🟢 সাহরী খাওয়া সুন্নাত। তবে পেট ভরে খেতে হবে এমন কোনো কথা নেই; এক ঢোক পানি পান করলেও সাহরীর সুন্নাত আদায় হবে।
হাদীস শরীফে আছে, রসূলুল্লাহ্ (স.) বলেছেন—
تسحروا، فإن في السحور بركة
“তোমরা সাহরী খাও। কেননা সাহরীতে বরকত রয়েছে।” (মুসলিম শরীফ)
অন্য হাদীসে বলা হয়েছে,— নবী কারীম (স.) বলেছেন, “সাহরীতে বরকত রয়েছে। সুতরাং তোমরা সাহরী খাওয়া কখনো ত্যাগ করো না। কিছু না থাকলে এক ঢোক পানি দিয়ে হলেও সাহরী করো। কারণ যারা সাহরী খায় তাদের উপর আল্লাহ রহমত বর্ষণ করেন এবং ফেরেশতারা তাদের জন্য রহমতের দুআ করেন।” (মুসনাদে আহমদ)
🟢 সুবহে সাদিকের কাছাকাছি সময় সাহরী খাওয়া মুস্তাহাব। তবে এত দেরি করা মাকরূহ যে, সুবহে সাদিক হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা হয়।
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ্ (স.) ইরশাদ করেছেন—
إنما معاشر الأنبياء أمرنا أن تعجل فطرنا وأن تؤخر سحورنا
“সকল নবীকে সময় হওয়ার পরপরই ইফতার তাড়াতাড়ি করতে এবং সাহরী শেষ সময়ে খেতে আদেশ করা হয়েছে।” (মাজমাউয যাওয়াইদ)
আমর ইবনে মায়মুন আলআওদী বলেন, সাহাবায়ে কেরাম দ্রুত ইফতার করতেন আর বিলম্বে সাহরী খেতেন। (মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা)
◼️ ইফতার : .
🟢 দেরি না করে সূর্যাস্তের সাথে সাথে ইফতার করা মুস্তাহাব।
হাদীস শরীফে আছে--
لا يزال الناس بخير ما عجلوا الفطر
“যতদিন মানুষ দেরি না করে সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করবে ততদিন তারা কল্যাণের উপর থাকবে।” (বুখারী)
রসূলুল্লাহ্ (স.) বর্ণনা করেছেন— আল্লাহ বলেন, ঐ বান্দা আমার কাছে অধিক প্রিয়, যে যথাশীঘ্র ইফতার করে। (অর্থাৎ সূর্যাস্তের পর মোটেই দেরী করে না।) (তিরমিযী)
🟢 মাগরিবের নামায পড়ার আগেই ইফতার করে নিতে হবে, যাতে সূর্যাস্তের সাথে সাথে ইফতার করার সওয়াব পাওয়া যায়।
আনাস ইবনে মালিক (রা.) বলেন— “রসূলুল্লাহ্ (স.) মাগরিবের নামায পড়ার আগে তাজা খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন। তাজা খেজুর না পেলে শুকনা খেজুর দ্বারা। আর তাও না পেলে এক ঢোক পানি দ্বারা ইফতার করতেন।” (তিরমিযী)
🟢 খেজুর দ্বারা ইফতার করা মুস্তাহাব। খেজুর না পেলে পানি দ্বারা ইফতার করতে হয়।
من وجد تمرا فليفطر عليه ومن لا يفطر على ماء، فإن الماء طهور
হযরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত— রসূলুল্লাহ্ (স.) বলেন, “যার কাছে খেজুর আছে সে খেজুর দ্বারা ইফতার করবে। খেজুর না পেলে পানি দ্বারা ইফতার করবে। কেননা পানি হল পবিত্র।” (তিরমিযী)
🟢 ইফতারের সময় দুআ কবুল হয় তাই এ সময় বেশি বেশি দু'আ-ইস্তিগফার করতে হয়। বিশেষত নিচে লিখিত এই দু'আ পড়তে হয়—
اَللّٰهُمَّ اِنِّيْ أَسْأَلُكَ بِرَحْمَتِكَ الَّتِيْ وَسِعَتْ كُلَّ شَيْءٍ اَنْ تَغْفِرَ لِيْ
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নী আসআলুকা বি রহমাতিকাল লাতি ওয়াসিয়াত কুল্লা শাইয়িন আন তাগ ফিরা লী।
অর্থ : হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে তোমার সেই রহমাতের উসীলায় প্রার্থনা করছি, যা সকল বস্তুতে পরিব্যাপ্ত, তুমি আমাকে মাফ করে দাও। (ইবনে মাজাহ)
🟢 ইফতার গ্রহণের সময় এ দু'আ পড়তে হয়—
اَللّٰهُمَّ لَكَ صُمْتُ وَ عَلىٰ رِزْقِكَ اَفْطَرْتُ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা লাকা সুমতু ওয়া আলা রিজকিকা আফ্তরতু।
অর্থ: হে আল্লাহ্! আমি তোমার জন্যই রোযা রেখেছিলাম এবং তোমার রিজিক দ্বারাই ইফতার করছি। (আবু দাউদ)
🟢 ইফতারের পর নবী কারীম (স.) এই দু'আ পড়তেন—
ذَهَبَ الظَّمَأُ وَ ابْتَلَّتِ الْعُرُوْقُ وَ ثَبَتَ الْاَجْرُ اِنْ شَاءَ اللهُ
উচ্চারণ: জাহাবাজ জমায়ু ওয়াব তাল্লা তিল উরুকু ওয়া শাবাতাল আজরু ইন শা- আল্লাহ
অর্থ: পিপাসা দূর হলো, শিরা-উপশিরা সতেজ হলো এবং রোযার সাওয়াবও লিপিবদ্ধ হবে ইন শা আল্লাহ। (আবু দাউদ)
Comments
Post a Comment