
ইসলাম শান্তির ধর্ম। ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান। মানুষের ইহকালীন ও পরকালীন জীবনের যাবতীয় ক্ষেত্র এবং শিক্ষা-সম্পর্কিত
দিকনির্দেশনা দেয় - ইসলামের পবিত্র গ্রন্থ কুরআন। কুরআনের নির্দেশনাকে বাস্তব ক্ষেত্রে রূপ দিয়েছেন মহানবী হজরত মুহাম্মদ (স.)। তিনি জগৎ ও জীবনের পার্থিব ও আধ্যাত্মিক সব সমস্যার সমাধান নিজ জীবনে বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেখিয়ে গিয়েছেন। মহানবী হজরত মুহাম্মদ (স.) নিজের পরিচয় দিয়ে বলেছেন— “আমাকে শিক্ষক হিসেবেই পাঠানো হয়েছে।”শিক্ষকরা মানুষ গড়ার কারিগর। একজন শিক্ষার্থী প্রকৃত মানুষ রূপে গড়ে ওঠার পেছনে মাতা-পিতার চেয়ে শিক্ষকের অবদান কোনো অংশে কম নয়। মহান আল্লাহ শিক্ষকদের মর্যাদা ও সম্মান দান করেছেন। ফলে সমাজে শিক্ষক মাত্রই বিশেষ মর্যাদা ও সম্মানের অধিকারী। শিক্ষকের ভূমিকার গুরুত্ব অপরিসীম। বলতে গেলে এর বিকল্প নেই।
❤️ শিক্ষককে সম্মান করো, মর্যাদা দাও:
প্রিয়নবী মুহাম্মদ (স.) বলেছেন— “তোমরা জ্ঞান অর্জন করো এবং জ্ঞান অর্জনের জন্য আদব-শিষ্টাচার শেখো। এবং যার কাছ থেকে তোমরা জ্ঞান অর্জন করো, তাকে সম্মান করো।” (আল-মুজামুল আওসাত)
তালীমুল মুতায়াল্লিম কিতাবে আছে —
إِنَّ الْعِلْمَ لَا يُفِيْدُ صَاحِبَهُ إِنْ لَمْ يَحْتَرِمْ أَسَاتِذَتَهُ وَ مُعَلِّمِيْهِ
“যতক্ষণ পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রীরা শিক্ষকের সম্মান করবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত সে জ্ঞানের দ্বারা উপকৃত হতে পারবে না।”
❤️ শিক্ষকদের প্রতি সম্মান ও শিষ্টাচার:
হাদীসে বর্ণিত হয়েছে— “আল্লাহর পরে, রসূলের পরে ওই ব্যক্তি সর্বাপেক্ষা মহানুভব যে জ্ঞানার্জন করে ও পরে তা প্রচার করে।” (মিশকাত শরিফ)
خُلَاصَةُ الْفَتْوىٰ কিতাবে আছে — “ছাত্রদের উচিত, শিক্ষকদের আগে আগে কথা না বলা। শিক্ষকদের বসার স্থানে না বসা। এমনকি তাদের অনুপস্থিতেও নয়।”
আল্লামা ইমাম রবী (রহ) বলেছেন—
إنَّهُ لَمْ يُقَلِّبْ أَوْرَاقَ الْكِتَابِ بِالْقُوَّةِ خَشْيَةَ أن يَّتَأَذَّىٰ الْأسْتَاذُ بِهٰذا الصَّوْتِ
অর্থাৎ- তিনি তার শিক্ষকের কষ্ট পাওয়ার আশংকায় তার সামনে জোর আওয়াজে কিতাবের পৃষ্ঠা উল্টাতেন না। শিক্ষক ছাত্রের কোনো জানা বিষয়ে যদি আলোচনা করেন, তাহলে তার উচিৎ, তার সামনে নিজের জ্ঞানকে প্রকাশ না করা। শিক্ষকের দূর্বলতা আলোচনা করা ছাত্রের জন্য বেয়াদবীমূলক আচরণ।
হাকিমুল উম্মত আশরাফ আলী থানবী (রহ) বলেছেন, “আল্লাহ তায়ালা আমাকে যা কিছু দিয়েছেন, শিক্ষকদের প্রতি মহব্বত ও সম্মানের কারণেই দিয়েছেন।”
❤ শিক্ষকদের প্রতি আদবসমূহ : —
◾ শিক্ষকের সাথে সাক্ষাত হলে ভদ্রভাবে সালাম দিতে হয়।
◾শিক্ষকের সাথে নম্রভাবে কথা বলতে হয়।
◾ শিক্ষকের আদেশ-নিষেধ পালন করতে হয়।
◾ শিক্ষকের সাথে তর্ক করতে নেই।
◾শিক্ষকের সাথে অপমানজনক কোনো আচরণ করতে নেই।
◾শিক্ষকের সমালোচনা করতে নেই।
◾কোনো শিক্ষকের সাহয্যের প্রয়োজন হলে বা বিপদে পড়লে যথাসম্ভব সাহায্য করতে হয়।
◾ শিক্ষকদের খিদমত করতে হয়।
◾শিক্ষকের মনে কষ্ট দিতে নেই।
◾শিক্ষক ডাকলে তাড়াতাড়ি সাড়া দিতে হয়।
◾শিক্ষকদের মনে ব্যথা দিয়ে থাকলে, ক্ষমা চেয়ে নিতে হয়।
❤️❤️❤️
আমার সকল শিক্ষকদের প্রতি মন থেকে দোয়া রইল।
আল্লাহ আপনাদের সবাইকে ভালো রাখুন !
Comments
Post a Comment