দুর্বল ঈমানের কিছু লক্ষন:

দুর্বল ঈমানের লক্ষণ কারণ ও প্রতিকার, durbol-imaan

আপনারা নিশ্চয়ই লক্ষ্য করে থাকবেন, আমাদের ঈমান কখন বাড়ে আবার কখন কমে। এ সম্পর্কে রাসূল (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন—

“আমাদের প্রত্যেকের ঈমান ক্রমশ জীর্ণ হতে থাকে যেভাবে “সাউব” (এক ধরনের পোশাক) জীর্ণ হয়ে যায় (পোশাক যেমন ক্রমশ পরিধান করতে থাকলে একসময় জীর্ণ হয়ে যায়, আমাদের ঈমানও ঠিক তেমনি জীর্ণ হয়ে যায়)।”

আর তাই প্রিয়নবী (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর উপদেশ হল–

(যেহেতু ঈমান জীর্ণ হয়ে যায়) “অতএব প্রত্যেক মুসলমানের উচিত হৃদয়ে ঈমানের নবায়নের জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছে দুয়া করা।” [মুসতাদরক হাকিম]

⚠️ আত্ম-সচেতনতার জন্য দুর্বল ঈমানের লক্ষনগুলো ভালোভাবে জেনে রাখা আবশ্যক। দুর্বল ঈমানের কিছু লক্ষন হল—

🚫 পাপ করা সত্ত্বেও মনে পাপবোধ সৃষ্টি না হওয়া।

🚫 শারীয়াত বিরুদ্ধ কার্যকলাপে লিপ্ত হওয়ার পরও মনে কোন অনুশোচনা বা অনুতাপ বোধ না হওয়া।

🚫 ভাল কাজে আলসেমি বোধ হওয়া বা ঢিলেমি করা। যেমন- নির্ধারিত সময়ে নামাজ আদায় না করা।

🚫 কুরআন তেলাওয়াতের ব্যপারে অনীহা এবং অনাগ্রহ বোধ করা।

🚫 কুরআনের তেলাওয়াত শুনে বিশেষ করে পাপের জন্য শাস্তি কিংবা সৎকাজের জন্য পুরুস্কারের কথা বলা হয়েছে এমন আয়াতগুলো শুনেও হৃদয়ে কোন রকমের কোন প্রভাব বা অনুভূতির তৈরি না হওয়া।

🚫 আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের জিকির - স্মরণ থেকে বিমুখ হওয়া এবং তাকে স্মরণ করা কঠিন মনে হওয়া।

🚫 রাসূল ﷺ এর সুন্নাহ আদায়ের ব্যপারে অবহেলা।

🚫 শুধু হারাম ও হালালকেই লক্ষ্য রাখা, মুস্তাহাব, মাকরুহ বিষয়গুলোর দিকে ভ্রূক্ষেপ না করা।

🚫 নিজে না করে অন্যকে ভালকাজের আদেশ দেওয়া।

🚫 কোন দলীল-প্রমান ছাড়াই কেবল তর্ক করতে ভাল লাগে তা-ই তর্ক করা।

🚫 বিপদে ধৈর্য ধারন করতে না পারা। যেমন— কেউ মারা গেলে উচ্চস্বরে বিলাপ করে, বুক চাপড়িয়ে কান্নাকাটি করা।

🚫 দুনিয়ার মোহে অন্ধ হয়ে যাওয়া। দুনিয়ার মোহে অন্ধ হওয়ার একটি লক্ষন হল পার্থিব কোন কিছুর ক্ষতি হলেই মানসিকভাবে ভেঙে পড়া।

🚫 খামখেয়ালী মেজাজ। যেমন- সামান্য বিষয়েই তুলকালাম করে ফেলা বা মেজাজ সবসময় খিটমিটে হয়ে থাকা।

🚫 ধন-সম্পদ, প্রভাব-প্রতিপত্তি, সামাজিক অবস্থান ইত্যাদির পিছনেই সারাক্ষন ছুটে চলা।

🚫 ক্রমাগত মানসিক দৈন্যতার পাশাপাশি আর্থিক কৃপণতা বাড়তে থাকা। ধনসম্পদ আঁকড়ে ধরে রাখার প্রবনতা।

🚫 অন্যের অবনতি, ক্ষয়-ক্ষতি দেখে মানসিক তৃপ্তি বোধ হওয়া।

🚫 অন্য মুসলিমদের কল্যাণসাধনের ব্যপারে কোনরূপ প্রচেষ্টা না থাকা।

🚫 ইসলামের তথা মুসলিমদের কল্যাণ এবং উন্নতি হয় এমন বিষয়ে দায়িত্বহীনতার পরিচয় দেয়া।

🚫 সবসময় নিজেকে নিয়েই ব্যস্ত থাকা। নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্যই শুধু বেঁচে থাকা। চরম আত্ন-কেন্দ্রিক জীবন যাপন করা।

Comments