দুয়া কবুলের অন্তরায় সমূহ—
♦১)- হারাম খাদ্য-পানীয় ও বস্ত্র :—
মানুষের খাদ্য-পানীয় যেমন শরীর গঠনে ভুমিকা রাখে তেমনি প্রাণ ও আধ্যাত্মিক ক্ষেত্রেও তার ভূমিকা আছে। খারাপ-পচা খাবার যেমন শরীরকে ক্ষতিগ্রস্ত করে তেমনি অবৈধ পথে উপার্জিত সম্পদ ও খাবারও আত্মা ও প্রাণের ক্ষতি সাধন করে। সুদ, ঘুষ, প্রতারণা, চুরি, ডাকাতি, অন্যের সম্পদ অবৈধভাবে ভোগ দখল, ইয়াতীমের সম্পদ আত্মসাৎ প্রভৃতি অবৈধ পদ্ধতিতে অর্জিত খাবার খেয়ে বা পোশাক পড়ে দুআ করলে তা আল্লাহর কাছে কবুল হয় না।
হাদীসে এসেছে :
ﻋﻦ ﺃﺑﻲ ﻫﺮﻳﺮﺓ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﻗﺎﻝ : ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ : ﺃﻳﻬﺎ ﺍﻟﻨﺎﺱ ﺇﻥ ﺍﻟﻠﻪ ﻃﻴﺐ ﻻ ﻳﻘﺒﻞ ﺇﻻ ﻃﻴﺒﺎ ﻭﺇﻥ ﺍﻟﻠﻪ ﺃﻣﺮ ﺍﻟﻤﺆﻣﻨﻴﻦ ﺑﻤﺎ ﺃﻣﺮ ﺑﻪ ﺍﻟﻤﺮﺳﻠﻴﻦ، ﻓﻘﺎﻝ ﺗﻌﺎﻟﻰ : ﴿ ﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟﺮُّﺳُﻞُ ﻛُﻠُﻮﺍ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻄَّﻴِّﺒَﺎﺕِ ﻭَﺍﻋْﻤَﻠُﻮﺍ ﺻَﺎﻟِﺤًﺎ ﺇِﻧِّﻲ ﺑِﻤَﺎ ﺗَﻌْﻤَﻠُﻮﻥَ ﻋَﻠِﻴﻢٌ ﴾ ﻭﻗﺎﻝ : ﴿ﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁَﻣَﻨُﻮﺍ ﻛُﻠُﻮﺍ ﻣِﻦْ ﻃَﻴِّﺒَﺎﺕِ ﻣَﺎ ﺭَﺯَﻗْﻨَﺎﻛُﻢْ ﴾ ﺛﻢ ﺫﻛﺮ ﺍﻟﺮﺟﻞ ﻳﻄﻴﻞ ﺍﻟﺴﻔﺮ ﺃﺷﻌﺚ ﺃﻏﺒﺮ ﻳﻤﺪ ﻳﺪﻳﻪ ﺇﻟﻰ ﺍﻟﺴﻤﺎﺀ : ﻳﺎ ﺭﺏ، ﻳﺎ ﺭﺏ، ﻭﻣﻄﻌﻤﻪ ﺣﺮﺍﻡ، ﻭﻣﺸﺮﺑﻪ ﺣﺮﺍﻡ، ﻭﻣﻠﺒﺴﻪ ﺣﺮﺍﻡ، ﻭﻏﺬﻱ ﺑﺎﻟﺤﺮﺍﻡ ﻓﺄﻧﻰ ﻳﺴﺘﺠﺎﺏ ﻟﺬﻟﻚ .
( ﺭﻭﺍﻩ ﻣﺴﻠﻢ 7/100)
আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন :‘হে মানব সকল! আল্লাহ পবিত্র, তিনি পবিত্র বস্তু ছাড়া কোনো কিছু গ্রহণ করেন না। তিনি এ ব্যাপারে মুমিনদের সে নির্দেশই দিয়েছেন যে নির্দেশ তিনি দিয়েছিলেন রাসূলদেরকে। তিনি বলেছেন : হে রাসূলগণ! তোমরা পবিত্র বস্তু হতে আহার কর ও সৎকর্ম কর; তোমরা যা কর সে সম্বন্ধে আমি সবিশেষ অবহিত। এবং তিনি (মুমিনদের উদ্দেশে) বলেন : হে মুমিনগণ! তোমাদের আমি যেসব পবিত্র বস্তু দিয়েছি তা হতে আহার কর। এ কথা বলার পর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এমন এক ব্যক্তির কথা বললেন, যে দীর্ঘ সফর করে মাথার চুলগুলোকে এলোমেলো করেছে এবং পদযুগল ধুলায় ধুসরিত করেছে অতঃপর আকাশের দিকে হাত তুলে দুআ করে, হে প্রভু! হে প্রভু! কিন্তু তার খাদ্য হারাম, তার পোশাক হারাম, তার শরীর গঠিত হয়েছে হারাম দিয়ে, কিভাবে তার দুআ কবুল করা হবে?” (মুসলিম)
এ হাদীসে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, যে হারাম খাদ্য খায়, হারাম পন্থায় উপার্জন করে, হারাম উপার্জনের কাপড় পড়ে তার দুআ কবুল হতে পারে না।
♦২)- সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজের নিষেধ বর্জন করা :
প্রতিটি মুসলিমের ওপর আল্লাহ ও তার রাসূল প্রদত্ত দায়িত্ব হল সমাজে সে সৎকাজের আদেশ করবে ও অন্যায় কাজ থেকে মানুষকে বিরত রাখবে। যদি এ দায়িত্ব পালন করা না হয় তবে দুআ কবুল করা হবে না।
হাদীসে এসেছে—
ﻋﻦ ﺣﺬﻳﻔﺔ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﻋﻦ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ : ﻟﺘﺄﻣﺮﻥ ﺑﺎﻟﻤﻌﺮﻭﻑ ﻭﻟﺘﻨﻬﻮﻥ ﻋﻦ ﺍﻟﻤﻨﻜﺮ ﺃﻭ ﻟﻴﻮﺷﻜﻦ ﺍﻟﻠﻪ ﺃﻥ ﻳﺒﻌﺚ ﻋﻠﻴﻜﻢ ﻋﻘﺎﺑﺎ ﻣﻨﻪ ﻓﺘﺪﻋﻮﻧﻪ ﻓﻼ ﻳﺴﺘﺠﻴﺐ ﻟﻜﻢ .
( ﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﺘﺮﻣﺬﻱ)
হুযাইফা রা. থেকে বর্ণিত যে, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: তোমরা অবশ্যই সৎকাজের আদেশ করবে ও অন্যায় কাজে বাধা দেবে অন্যথায় আল্লাহ তোমাদের প্রতি শাস্তি নাযিল করবেন অতঃপর তোমরা দুআ করবে কিন্তু তিনি তা কবুল করবেন না। (তিরমিজী)
Comments
Post a Comment